ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস্ এ নয়া ইতিহাস পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের শিল্পীর

12th July 2020 12:05 pm বর্ধমান
ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস্ এ নয়া ইতিহাস পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের শিল্পীর


নিজস্ব সংবাদদাতা ( মন্তেশ্বর ) :  ক্ষুদ্রতম ক্যানভাসের উপর স্বাধীনতা সংগ্রামী দেশনায়কদের ছবি এঁকে ইতিহাস তৈরী করলো পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের সুটরা গ্রামের বাসিন্দা ও আর্টের ছাত্র বুবুন পাল।ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে (India Book of Records) নাম তুলে সাড়া ফেলে দেওয়ায় সেই-ই এখন জোর চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে।ভাগচাষীর ছেলের এমনিই এক সাফল্যে ভীষণ খুশি তার পরিবার পরিজন, আত্মীয়স্বজন , বন্ধুবান্ধব ও শিক্ষকরা ।  পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর কলেজ থেকে ভূগোলে অনার্স নিয়ে দু-বছর আগেই পাশ করে মন্তেশ্বরের সুটরা গ্রামের ছাত্র বুবুন পাল।এরপরেই সে দিল্লীর লক্ষ্ণৌ ইউনিভার্সিটি থেকে আর্ট (ডিপ্লোমা) নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে।বর্তমানে তার ফাইনাল ইয়ার চলছে।বাবা যজ্ঞেশ্বর পাল পেশায় ভাগচাষী।কোনোরকমে সংসার চালিয়ে ছেলের পড়াশোনা চালাতেই তার সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা হয়ে দাঁড়ায়।কিন্তু বুবুনের অদম্য জেদ ও নিষ্ঠার কারণে কোনোরকমে দিল্লীতে গিয়ে সে পড়াশোনা শুরু করে।আর এই পড়াশোনার খরচ চালাতে দিল্লীতেই সে শুরু করে দেয় পার্ট টাইম জব।আর এর মধ্যেই বুবুন ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের অনলাইন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের তিন তারিখে।প্রতিযোগিতার বিষয় ছিলো তিন মিনিটের মধ্যে  2.9/1.4 সেমির ক্ষুদ্রতম ক্যানভাসের উপর ক্ষুদ্রতম শিল্প তৈরী করা।এই প্রতিযোগিতায় সে ব্যবহার করে কৃত্রিম পাঁচটি নখ।তার উপর স্বল্প পরিসর জায়গায় স্বাধীনতা সংগ্রামী দেশনায়ক নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু,মহাত্মা গান্ধী,ভগৎ সিং ও ভারতের পতাকা হাতে এক ব্যক্তির ছবি এঁকে ফেলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে।পেনসিল,জেল নেল পালিশ ও নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তার ওই ক্ষুদ্রতম শিল্প জীবন্ত রূপ পায়।আর তার পরেই সে জানতে পারে যে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস তার এই শিল্পকাজকে স্বীকৃতি দিয়েছে।এরপরেই শুক্রবার পোষ্টালের মাধ্যমে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের শংসাপত্র সহ মেডেল ও অন্যান্য পুরষ্কার আসে তার গ্রামের বাড়িতে।তেইশ বছরের যুবক বুবুনের এইরকমই এক ইতিহাস তৈরীতে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন সুটরা গ্রামের মানুষজন।তাকে শুভেচ্ছা,ভালোবাসা ও আশীর্বাদ জানান তার বাবা,মা,শিক্ষক,আত্মীয় পরিজন,বন্ধুবান্ধবরা।এই বিষয়ে তার মা দুর্গা পাল ও বাবা যজ্ঞেশ্বর পাল বলেন,‘ছোটো থেকেই ছেলে বেশ মেধাবী।শুধু তাই নয় ছবি আঁকার নেশা,শিল্পকাজের কারুকার্য তৈরীর শখও রয়েছে ভীষণ পরিমাণে।ওর এই পড়াশোনার খরচ জোগানের সামর্থ্য আমাদের নেই।সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা পেলে আগামীদিনেও এইভাবে রাজ্য ও দেশের নাম উজ্বল করবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।’স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষক সন্দীপ রায় বলেন,‘বুবুনের শিল্পকাজে তৈরী হোলো এক নতুন ইতিহাস।কিছু না কিছু করে দেখানোর তাগিদটাই ওকে এই সাফল্য এনে দিয়েছে।আমরা ওর জন্য গর্বিত।ভীষণ ভালো লাগছে।’ইতিহাস গড়ার কারিগর উচ্ছ্বসিত বুবুন পাল জানায়,‘ছোট থেকেই এই ধরনের কিছু একটা করবো ভেবেছি।কিন্তু এইটা কোনোদিন ভাবিনি,যে এই শিল্পকাজটাই আমাকে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে দেবে।ভবিষ্যতে আর্ট নিয়েই এগোতে চাই।’





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।